যখন আমরা কোনো এক্সাম দিয়ে রেজাল্ট খারাপ করি কিংবা পাবলিক ভার্সিটি গুলোতে পরিক্ষা দিয়ে চান্স না পাই তখন আমরা আবারো কিন্তু চেষ্টা করি ভালো ভাবে পরিক্ষা দিতে। চান্স পেতেই হবে, না হলে বিয়ে দিয়ে দিবে (অনেক মেয়েদের ক্ষেত্রে)! কিংবা ক্লাসে আমাদের ফার্স্ট হতেই হবে, বারবার পরিক্ষা দিয়ে আমি ফার্স্ট হতে পারছি না তাই আবারো আমাকে কাজ করতে হবে ফার্স্ট হবার জন্য। এই কাজগুলো হচ্ছে সমাজ এবং আশেপাশের পরিবেশকেন্দ্রিক। নিজের জীবনেও এসব কাজ মাঝেমাঝে ভালো ইফেক্ট ফেলে, সবসময় না। তুমি পরিক্ষায় ভালো করলে কিংবা পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পেলে তোমার নাম জানবে সমাজের লোকেরা, আত্নীয়-স্বজন তোমাকে নতুন করে চিনবে, তোমার বন্ধুরা তোমাকে পাত্তা দিবে। তুমি তখন ফিল করতে পারবা I'm something!
আরেক ধরনের কাজ আছে যেগুলো আমরা বারবার করতে চাই না যদি প্রথমবার করার পর নেগেটিভ আউটপুট বা ফিডব্যাক আসে। যেমন হতে পারে তুমি খুব সুন্দর ছবি আঁকো, যে মানুষটা ছবি পছন্দ করে না তুমি তার কাছে তোমার ছবি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে ছবিটা কেমন হয়েছে। সে তোমাকে নেগেটিভ ফিডব্যাক দিলো, ব্যস! তোমার ছবি আঁকার ইন্টারেস্টও কমে গেলো। এভাবে নেগেটিভ ফিডব্যাক পেলে মানুষ কখনোই সেই কাজটা আর করতে চায় না যদিও সেই কাজটায় তার হাত ভালো ছিলো।
তাই তুমি যে কাজই করো না কেনো, তোমার হাতে তিনটা জিনিস থাকতে হবে। কোন কাজটা করবা সেটার টার্গেট ফিক্সড করতে হবে। হুট করে কোনো কাজের টার্গেট ঠিক করা উচিত না। যখন তুমি তোমার করতে যাওয়া কাজ সম্পর্কে প্রচুর জিনিস জানবে ঠিক তখন থেকে টার্গেট করে রাখো সেই কাজটা তুমি করবে।
দ্বিতীয়ত, কাজের টার্গেট ফিক্সড করার পর সবচেয়ে বড় যে জিনিসটা দরকার হবে সেটা হলো সাপোর্ট। হতে পারে সেটা ফ্যামিলি সাপোর্ট, বন্ধুদের সাপোর্ট, পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে সাপোর্ট কিংবা টাকা-পয়সার সাপোর্ট। তোমার কাজে মোটিভেশন দেওয়ার মত মানুষদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। তুমি যেটা নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছো সেই সেক্টরকে কারা কারা ভালোবাসে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করতে পারো। তারা তোমাকে অবশ্যই পজেটিভ ফিডব্যাক দিবে। তাদের একটা ছোট্ট পজেটিভ ফিডব্যাক তোমাকে বিশাল কাজ করার শক্তি যোগাবে।
তৃতীয়ত, তুমি যে কাজটা করার টার্গেট ঠিক করেছো সেই কাজ করার ক্ষমতা, সামর্থ্য, Ability থাকতে হবে তোমার। তুমি রাত জেগে কখনোই পড়তে পারো না কিন্তু তুমি টার্গেট নিয়ে পরিক্ষার আগেরদিন সারারাত জেগে পড়ালেখা করতে চাচ্ছো। তোমার এই কাজে ফ্যামিলিও ১০০% সাপোর্ট করছে। যেহেতু কখনোই তুমি রাত জেগে পড়ো নি, তোমার টার্গেট এবং সাপোর্ট দুটো থাকলেও তোমার ক্ষমতা বা ability নেই রাত জেগে পড়ার। তাই অনেকেই আছো যারা রাতে পড়ার টেবিলে ঘুমিয়ে যায়। আমার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ঘটে, আমি কখনোই রাত জেগে পড়তে পারি না, তাই রাত জেগে পড়ার চেষ্টাও করি না।
তাই প্রতিটা কাজ যখন আমরা করবো তখন অবশ্যই সেই কাজটা ঠিক করে নিবো, টার্গেট ফিক্সড করবো, কখন-কিভাবে-কোন কাজটা করবো সেটার টার্গেট ফিক্সড করবো। সেইসাথে চেষ্টা করবো আমাদের আশেপাশের সঠিক মানুষদের কাছ থেকে সাপোর্ট নেওয়ার, সবসময় হয়ত সেই সাপোর্ট আমরা নাও পেতে পারি, তখন চেষ্টা করবো নিজেকে নিজের সাপোর্ট দেওয়ার। আর অবশ্যই কাজটা হবে আমাদের সাধ্যের মধ্যে। একদিনেই বিল গেটস হওয়া যায় না, ছোট ছোট কাজ করার ক্ষমতা অর্জন করলে একটা সময় অনেক বড় কাজ করে ফেলতে পারবো আমরা।